ক্রিকেট খেলার সর্বশেষ আন্তর্জাতিক নিয়ম
আইনসমূহ
খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা
প্রথম চারটি আইনে খেলোয়াড়, আম্পায়ার ও স্কোরার বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে।
আইন-১: খেলোয়াড় - একটি ক্রিকেট দলে অধিনায়কসহ এগারোজন খেলোয়াড় থাকবে। আনুষ্ঠানিক প্রতিযোগিতার বাইরে দলগুলো আলোচনা করে এগারোজনের অধিক খেলোয়াড় অংশ নিতে পারবে। কিন্তু মাঠে কেবলমাত্র এগারোজন খেলোয়াড়ই অবস্থান করবেন।
আইন-২: অতিরিক্ত খেলোয়াড় - আঘাতপ্রাপ্ত ফিল্ডারের পরিবর্তে একজন অতিরিক্ত খেলোয়াড়কে মাঠে স্থলাভিষিক্ত করা যাবে। তবে তিনি ব্যাট, বল, উইকেট-রক্ষণ অথবা অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।[৪] যদি মূল খেলোয়াড় আরোগ্য লাভ করেন তাহলে তিনি মাঠে ফিরে আসতে পারবেন। ব্যাটসম্যান যদি দৌঁড়ে রান সংগ্রহ করতে অপারগ হন, তাহলে তিনি ব্যাটিং চালিয়ে যেতে পারবেন ও এক্ষেত্রে ‘রানার’ তাকে সহযোগিতা করতে পারবেন। অন্যথায় তিনি ‘রিটায়ার হার্ট’ অথবা অসুস্থতার জন্য প্যাভিলিয়নে যাবেন ও সুস্থ দেহে পুণরায় তার বাদ-বাকী ইনিংস সম্পন্ন করতে পারবেন।
আইন-৩: আম্পায়ার - খেলায় দু’জন আম্পায়ার থাকেন। তারা খেলার নিয়ম-কানুন প্রয়োগ, অন্যান্য প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে স্কোরারের মনোযোগ আকর্ষণ করেন। কোন কারণে আইনের বাস্তবায়ন সম্ভব না হলে উচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটে মাঠের বাইরে অবস্থানরত ও মাঠের আম্পায়ারকে সহযোগিতার নিয়োজিত তৃতীয় আম্পায়ার কর্তৃক সিদ্ধান্ত চূড়ান্তরূপে গ্রহণ করা হয়।
আইন-৪: স্কোরার - দুইজন স্কোরার থাকে। তারা আম্পায়ারদ্বয়ের কাছ থেকে প্রদত্ত সঙ্কেত গ্রহণপূর্বক স্কোরকার্ডে অন্তর্ভুক্ত করেন।
সরঞ্জাম ও পীচের অবস্থান
আইন-৫: বল - ক্রিকেট বলের আয়তন ৮ ইঞ্চি (২২.৩৮ সেমি) থেকে ৯ ইঞ্চি (২২.৮৬ সেমি) মধ্যে হতে হবে। এর ওজন হবে ৫.৫ থেকে ৫.৭৫ ১৩⁄১৬আউন্স (১৫৫.৯ - ১৬৩ গ্রাম)। কেবলমাত্র নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই বল ব্যবহৃত হবে। কোন কারণে এটি হারিয়ে গেলে একই ধরনের অন্য একটি বল ব্যবহার করতে হবে। প্রত্যেক ইনিংসের শুরুতেই বলটি পরিবর্তিত হবে। এছাড়াও ফিল্ডিংয়ে অবস্থানরত দলের অনুরোধক্রমে আইনে বর্ণিত সর্বনিম্নসংখ্যক ওভার শেষে নতুন বলের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। বর্তমানে টেস্ট ক্রিকেটে ৮০ ওভার শেষে নতুন বলের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।
আইন-৬: ব্যাট - ৩৮ ইঞ্চি (৯৭ সেমি) দৈর্ঘ্যের বেশি এবং ৪.২৫ ইঞ্চি (১০.৮ সেমি) প্রস্থের বেশি হবে না। ব্যাটের হাতলে ধরা হাত অথবা গ্লাভস ব্যাটের অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে। ডেনিস লিলি বেশ ভারী ধাতব পদার্থ অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরী কমব্যাট ব্যাট নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলায় নেমে বিতর্কের সৃষ্টি করেন।[৫] কিন্তু আইনে বর্ণিত রয়েছে যে, ব্যাটের প্রান্তভাগ অবশ্যই কাঠের হতে হবে। অনুশীলনের সময় এটি সাদা উইলো কাঠের হবে।
আইন-৭: পীচ - মাঠের মধ্যভাগে চতুর্ভূজ আকৃতির হবে যার দৈর্ঘ্য ২২ গজ (২০ মি) ও প্রস্থ ১০ ফু (৩.০ মি)। মাঠ পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ পীচ প্রস্তুত ও নির্বাচন করবেন। কিন্তু খেলায় ঐ পীচটি একবারই ব্যবহৃত হবে। এরপর পীচটি আম্পায়ারদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আম্পায়ারদ্বয় খেলার উপযোগী পীচ নির্বাচন করবেন। যদি তারা মনে করেন যে পীচটি অনুপযুক্ত তাহলে তারা উভয় অধিনায়কের সম্মতিক্রমে পীচ পরিবর্তন করবেন। পেশাদার ক্রিকেটে সর্বদাই পীচ ঘাসযুক্ত হবে। কিন্তু নন-টার্ফ পীচের ক্ষেত্রে কৃত্রিম আচ্ছাদন সর্বনিম্ন দৈর্ঘ্যে ৫৮ ফুট (১৮ মিটার) ও প্রস্থে ৬ ফুট (১.৮ মিটার) হতে হবে।
আইন-৮: উইকেট - অধিকাংশ সময়ই উইকেটে দুইটি সেটের একটি হিসেবে তিনটি স্ট্যাম্প ও দুইটি বেইল ক্রিকেট পিচের শেষ প্রান্তসীমায় রাখা হয়।[৬] প্রত্যেকটি কাঠের স্ট্যাম্প লম্বায় ২৮ ইঞ্চি (৭১ সেমি) হবে। স্ট্যাম্পগুলো ব্যাটিং ক্রিজে সমান দূরত্ব বজায় রেখে স্থাপন করতে হবে। প্রস্থে এর অবস্থান হবে ৯ ইঞ্চি (২৩ সেমি)। দুইটি কাঠের বেইল স্ট্যাম্পের উপরিভাগে থাকবে। বেইলগুলো স্ট্যাম্পের উপরে ০.৫ ইঞ্চি (১.৩ সেমি) বেশি হবে না। বেইলের দৈর্ঘ্য হবে ৪ ইঞ্চি (১০.৯৫ সেমি)। তবে কিশোরদের ক্রিকেটে উইকেট ও বেইলের দৈর্ঘ্য পৃথক হয়। যদি বাতাসের কারণে বেইল নিচে পড়ে যায় তাহলে আম্পায়ারদ্বয় বেইলবিহীন অবস্থায় খেলা চালাতে পারবেন। ৫⁄১৬
আইন-৯: বোলিং, পপিং ও রিটার্ন ক্রিজ - উভয় পীচের শেষ প্রান্তরেখার মধ্যাংশে স্ট্যাম্পকে উদ্দেশ্য করে তৈরী করা হয়। প্রত্যেক বোলিং ক্রিজের দৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ৮ ফুট ৮ ইঞ্চি (২.৬৪ মি)। পপিং ক্রিজে ব্যাটসম্যানের অবস্থান নিশ্চিত করাসহ নো-বল নির্ধারণ করা হয়। পীচের উভয় প্রান্তেই বোলিং ক্রিজের সমান্তরালে মধ্য স্ট্যাম্পের উভয়দিকে কমপক্ষে ৬ ফুট (১.৮ মি) হবে। রিটার্ন ক্রিজ মূলত বোলার কর্তৃক বল ডেলিভারির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এর দৈর্ঘ্য ৪ ফুট ৪ ইঞ্চি (১.৩২ মি) হবে।
আইন-১০: খেলার আয়তন প্রস্তুত ও রক্ষণাবেক্ষণ - সচরাচর পীচে বল ফেললে বল বাউন্স নিবে। বলের এ আচরণের অধিকাংশই পীচের অবস্থার উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। এ প্রেক্ষিতে পীচের ব্যবস্থাপনার জন্য বিস্তারিত নিয়ম রয়েছে। এ আইনে কিভাবে পীচ প্রস্তুত করতে হবে, রোলিং ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
আইন-১১: পীচ ঢাকা - বৃষ্টি কিংবা শিশিরস্নাত অবস্থা থেকে রক্ষা পাবার উদ্দেশ্যে গ্রাউন্ডসম্যান কর্তৃক ঢাকতে হবে। পূর্বেই উভয় অধিনায়কদের সম্মতিতে পীচের ঢাকা হবে। পীচের কোথায় বল পড়লে মারাত্মক ক্ষতিসাধিত হবে, বোলারের রান-আপে সমস্যা হবে কি-না তা যথাসাধ্য নজর রাখতে হবে।
খেলার ধরণ
আইনের ১২ থেকে ১৭নং ধারায় ক্রিকেট খেলার ধরনপ্রণালী বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
আইন-১২: ইনিংস - উভয় দল এক বা দুই ইনিংসে খেলায় সম্মতি প্রদান করবে ও সময় অথবা ওভার সংখ্যা দিয়ে ইনিংস নির্ধারিত হবে। খেলা শুরুর চুক্তির তুলনায় প্রতিযোগিতার নিয়মাবলীই এখানে প্রাধান্য পাবে। দুই ইনিংসের খেলায় উভয় দল ধারাবাহিকভাবে ব্যাটিং করবে, অন্যথায় ফলো-অনের প্রয়োগ ঘটবে। সকল ব্যাটসম্যান আউট হলে, খেলতে অপারগতা প্রকাশ করলে, অধিনায়ক কর্তৃক ইনিংস ঘোষণা করলে, নির্ধারিত সময় বা ওভার সংখ্যায় পৌঁছলে ইনিংসের সমাপ্তি হবে। অধিনায়ক মুদ্রা নিক্ষেপের মাধ্যমে ব্যাট কিংবা বল করার কথা ঘোষণা করবেন।
আইন-১৩: ফলো-অন - দুই ইনিংসের খেলায় যদি দ্বিতীয় পর্যায়ে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম পর্যায়ে ব্যাটিংকারী দলের তুলনায় কম রান সংগ্রহ করে তাহলে প্রথম ব্যাটিংকারী দল জোরপূর্বক প্রতিপক্ষকে পুণরায় ব্যাটিং করতে নির্দেশ করবে। সেক্ষেত্রে প্রথম দল পুণরায় ব্যাট করার ঝুঁকি গ্রহণ করে না ও দলের জয়ের সম্ভাবনা ব্যাপক থাকে। পাঁচ বা ততোধিক দিনের খেলার জন্য কমপক্ষে ২০০, তিন বা চারদিনের খেলার জন্য ১৫০, দুইদিনের জন্য ১০০ ও একদিনের জন্য ৭৫ রানের পার্থক্য থাকতে হবে। খেলা শুরুর পর থেকে খেলার সময়সীমা পূর্ব-নির্ধারিত হবে।
আইন-১৪: ডিক্লারেশন ও ফরফিচার - ব্যাটিংকারী অধিনায়ক যে-কোন সময় দলের ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করতে পারেন। এছাড়াও তিনি তার নিজের ইনিংস শুরুর পূর্বেও এ অধিকার থেকে নিজেকে বঞ্চিত রাখতে পারেন।
আইন-১৫: বিরতিকাল - প্রত্যেক দিনের খেলার মাঝে, ইনিংসের মাঝে ১০ মিনিট, মধ্যাহ্নভোজন, চাবিরতি ও জলপানের বিরতি থাকবে। খেলা শুরুর পূর্বে সময়সীমা ও বিরতির দৈর্ঘ্য উল্লেখ করতে হবে। এছাড়াও কিছুক্ষেত্রে সাময়িক বিরতি এবং বিরতির দৈর্ঘ্য কিছু অবস্থার উপর নির্ভরশীল। কোন কারণে নবম উইকেটের পতন ঘটলে চাবিরতিকাল পরের ৩০ মিনিট পর্যন্ত দেরি হতে পারে।
আইন-১৬: খেলা শুরু - আম্পায়ারের উচ্চারিত শব্দ ‘প্লে’র মাধ্যমে খেলা শুরু হয় ও প্রত্যেক বিরতিকালে ‘টাইম’ শব্দ উচ্চারিত হবে। খেলার শেষ ঘণ্টায় কমপক্ষে ২০ ওভার বোলিং করতে হবে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত আরও ২০ ওভার খেলার মাধ্যমে বর্ধিত করা যেতে পারে।
আইন-১৭: মাঠে অনুশীলন - খেলা চলাকালীন ব্যাটিং কিংবা বোলিং অনুশীলন করা যাবে না। তবে খেলা শুরুর পূর্বদিন এবং খেলা শেষ হবার পরদিন অনুশীলন করা যাবে। আম্পায়ার যদি মনে করেন যে, খেলার সময় নষ্ট হচ্ছে না তাহলে একজন বোলার প্রস্তুতিসূচক ‘রান-আপে’ অংশ নিতে পারবেন।
স্কোর ও জয় নির্ধারণ
কিভাবে রান সংগ্রহ করা যাবে ও কিভাবে একটি দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা যাবে এ সংক্রান্ত আইন এখানে বর্ণিত রয়েছে।
আইন-১৮: রান সংগ্রহ - দুইজন ব্যাটসম্যান পিচের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত অতিক্রম করলে রান সংগৃহীত হবে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত রানের পাশাপাশি দলীয় রান স্ফীত হবে। এক বল থেকে বেশ কয়েকটি রান সংগৃহীত হতে পারে।
আইন-১৯: বাউন্ডারি - ক্রিকেট মাঠের চতুর্দিকে গোলাকৃতি অবস্থায় বাউন্ডারি নির্দেশ করা থাকে। কোন কারণে বল ঐ সীমারেখায় স্পর্শ করে কিংবা অতিক্রম করে তাহলে চার রান সংগৃহীত হবে। আবার, বল যদি মাঠে স্পর্শ না করে সীমারেখার উপর দিয়ে মাঠের বাইরে যায়, তাহলে ছয় বা ছক্কা হবে।
আইন-২০: লস্ট বল - খেলা চলাকালীন সময়ে বল হারিয়ে গেলে বা বল উদ্ধার করা না গেলে ফিল্ডিংয়ে অংশগ্রহণকারী দল লস্ট বল হয়েছে বলে জানাবেন। নো-বল ও ওয়াইডের ন্যায় ব্যাটিংকারী দল অতিরিক্ত রান দাবী করতে পারবেন। এ রান সংখ্যা ছয়ের অধিক হবে এবং এর সাথে প্রকৃত রানও যুক্ত হবে।
আইন-২১: ফলাফল - খেলায় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী দল বিজয়ীরূপে ঘোষিত হবে। কোন কারণে উভয় দলের রান সংখ্যা সমান হলে খেলাটি টাই বলে গণ্য হবে। এছাড়াও, উভয় দলের ইনিংস শেষ হবার পূর্বে সময় শেষ হয়ে গেলে খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হবে।
আইন-২২: ওভার - ছয়টি বল ছোড়া হলে একটি ওভার হিসেবে বিবেচিত হবে। তন্মধ্যে ওয়াইড ও নো-বল যুক্ত হবে না। ধারাবাহিকভাবে ওভার করার জন্য পিচের অন্যপ্রান্তও ব্যবহৃত হবে। তবে, একজন বোলার উপর্যুপরী দুই ওভার বোলিং করার অধিকারী হবেন না।
আইন-২৩: ডেড বল - খেলা চলাকালীন বোলার রান আপরত অবস্থায় বলের উপর নিয়ন্ত্রণ হারালে বলটি ডেড বলে রূপান্তরিত হবে। একবার বল ডেড হিসেবে গণ্য হলে কোন রান হবে না এবং কোন ব্যাটসম্যান আউট হবেন না। অনেকগুলো কারণে বল ডেড হতে পারে। সচরাচর ব্যাটসম্যান আউট হলে, বাউন্ডারি হলে কিংবা বোলার বা উইকেট-রক্ষকের কাছে বল এলে বল ডেড হবে।
আইন-২৪: নো-বল - কোন কারণে বোলার ভুল জায়গায় বোলিং করলে, বল ডেলিভারির সময় তার কনুই সোজা না রাখলে, বিপজ্জ্বনকভাবে বোলিং করলে, বল দুইবার বাউন্স বা ব্যাটসম্যানের কাছে গড়িয়ে গেলে, ফিল্ডার অবৈধস্থানে অবস্থান নিলে বলটি নো-বল হিসেবে গণ্য হবে।[৭] নো-বলের কারণে ব্যাটিং দল অতিরিক্ত রান পাবে। এছাড়াও দৌঁড়ে রান নিলে তা-ও যুক্ত হবে। নো-বলে ব্যাটসম্যান আউট হবেন না। তবে রান-আউটের শিকার হতে পারেন অথবা বল হাতে ধরলে, বলকে দুইবার আঘাত করলে বা ফিল্ডিংয়ে বাঁধা দিলে ব্যাটসম্যান আউট হবেন।
আইন-২৫: ওয়াইড বল - আম্পায়ার যদি মনে করেন যে, নিক্ষিপ্ত বলটি স্ট্রাইকিং প্রান্তে অবস্থানরত ব্যাটসম্যানের নাগালের বাইরে ও বেশ দূর দিয়ে অতিক্রম করার ফলে তিনি ব্যাট স্পর্শ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তাহলে তিনি বোলার কর্তৃক ছোড়া বলটিকে ওয়াইড হিসেবে আখ্যায়িত করবেন।[৮] এছাড়াও বল বাউন্সারে রূপান্তরিত হয়ে ব্যাটসম্যানের মাথার অনেক উপর দিয়ে গেলেও ওয়াইড হবে। ওয়াইড থেকে অতিরিক্ত এক রান যুক্ত হবে।
আইন-২৬: বাই ও লেগ বাই - বল যদি নো-বল বা ওয়াইড না হয়ে ব্যাটসম্যানের পাশ দিয়ে চলে যায় ও রান সংগ্রহ করা হয় তাহলে তা বাই হিসেবে ধরা হবে। নো-বল না হয়েও যদি বল ব্যাট স্পর্শ না করে ব্যাটসম্যানকে স্পর্শ করে রান সংগ্রহ করলে তা লেগ বাই হবে। কিন্তু ব্যাটসম্যান যদি বল মারার চেষ্টা না চালনা বা বল থেকে নিজেকে দূরে রাখেন, তাহলে তা লেগ বাই হবে না। বাই ও লেগ বাই ব্যাটসম্যানের ব্যক্তিগত রান নয় বরং দলীয় রান।
ডিসমিসালের ধরন
কিভাবে ব্যাটসম্যান ডিসমিস বা আউট হবেন এ সংক্রান্ত ২৭ থেকে ২৯ পর্যন্ত বর্ণিত হয়েছে।
আইন-২৭: আবেদন - ফিল্ডারগণ যদি মনে করেন যে, ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন তাহলে তারা আম্পায়ারের কাছে হাউজ দ্যাট বলে আবেদন করেন। সচরাচর তারা পরের বল করার পূর্বেই হাত উঠিয়ে সমস্বরে এ আবেদন জানান। তারপর আম্পায়ার সিদ্ধান্ত নেন যে, ব্যাটসম্যান সত্যিকার অর্থেই আউট হয়েছেন কি-না। কেবলমাত্র বোল্ড হবার ন্যায় নিশ্চিত বিষয় বাদে অন্য সকল ধরনের ক্ষেত্রে ডিসমিসালের আবেদন করা হয়ে থাকে। ব্যাটসম্যান যদি মনে করেন যে তিনি আউট হয়েছেন তাহলে তিনি আবেদন বা আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নেয়ার পূর্বেই পিচ ত্যাগ করবেন।
আইন-২৮: উইকেট পতন - উইকেট পতনে অনেকগুলো পদ্ধতি রয়েছে। কোন কারণ বল উইকেটে আঘাত করলে, ব্যাটসম্যান উইকেটে আঘাত করলে, ফিল্ডার তার হাতে বল লুফে নিলে এবং কমপক্ষে একটি বেইল পড়ে গেলে উইকেট পতন ঘটবে।
আইন-২৯: ব্যাটসম্যান আউট অব হিজ গ্রাউন্ড - ব্যাটসম্যান তার নিজ সীমারেখার বাইরে গেলে রান আউট বা স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হবেন। তিনি বা তার ব্যাট নিয়ে পপিং ক্রিজের বাইরে অবস্থান করলে এ আইনে আউট হবেন। কোন কারণে উভয় ব্যাটসম্যান পিচের মাঝামাঝি এলাকায় অবস্থানকালে উইকেটের পতন ঘটলে যিনি কাছাকাছি থাকবেন তিনি মাঠের বাইরে চলে যাবেন।
No comments
Thank you for comment.